জাল দলিল চেনার উপায় ও প্রতিকার

জাল দলিল চেনার উপায় ও প্রতিকার

দবীর সাহেব গ্রামের মধ্যবিত্ত লোক। বাসচাপা পড়ে ১ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রী রোকেয়া কে রেখে আকস্মিক ইহলোক ত্যাগ করেন। মারা যাওয়ার কিছুদিন পরে তার আপন ছোট ভাই এসে হঠাৎ দাবী করে যে মৃত্যুর পূর্বে দবীর সাহেব তার কাছে পূর্ব পাশের কলা বাগান এবং আম বাগান বিক্রি করে গেছেন, এবং এই মর্মে একটি দলিল দেখান যা দেখে দবীর সাহেবের পরিবার বোকাবনে যান।

জাল দলিল কী?

জাল দলিল বলতে আসলে ভূয়া ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সৃজিত কোন দলিলকে বুঝায়। ইহা আসলে অরজিনাল দলিলের মত দেখতে হলেও এর কোন বিধিবদ্ধ বাস্তবিক অস্তিত্ব থাকেনা, মূলত প্রতারণাত্বক মানসিকতা নিয়েই এই দলিল সৃজন করা হয়।

কিভাবে চিনবেন?

১। ভালো করে তারিখ, কাগজ, সিল ইত্যাদি যাচাই করুন।

২। কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সঙ্গে মিলিয়ে নিন।

৩। দলিলে ব্যবহৃত স্ট্যাম্পের পেছনে কোন ভেন্ডার থেকে স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে এবং কার নামে কেনা হয়েছে খেয়াল রাখুন। প্রতিটি স্ট্যাম্পের পেছনে একটি ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকে। এ নম্বরটি ঠিক আছে কিনা, প্রয়োজনে স্ট্যাম্প বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করে যাচাই করে করুন।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

৪। সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া কোনো বিক্রীত দলিলের দলিল লেখকের নাম ঠিকানা জেনে সরেজমিন কথা বলে দলিল সম্পর্কে যেনে নিন।

৫। দলিল বিষয়ে পান্ডিত্য আছে এমন কোন আইনজীবী বা দলিল লেখকের সাহায্য নিন।

অপরাধী মনের অজান্তেই অনেক ক্লু রেখে যায় অপরাধের সময়, দলিলের এসব বিষয় বুঝতে অভিজ্ঞতা আবশ্যক।

প্রতিকার কি?

১। জাল দলিল সম্পর্কে অবগত হওয়ার সাথে সাথেই উক্ত জাল দলিল বাতিলের জন্য দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে হবে। মনে রাখবেন যার স্বার্থ আছে, তিনিই কেবল দলিল বাতিলের মামলা করতে পারবেন। কিন্তু তামাদি আইন, ১৯০৮-এর ৯১ ধারা অনুসারে দলিল বাতিলের মোকদ্দমা করতে হবে দলিল সম্পর্কে অবগত হওয়ার তিন বছরের মধ্যে নয়তো এধরনের মামলা তামাদি হয়ে যাবে এবং এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। তবে মামলার তামাদি হয়ে গেলে সুনিদির্ষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুসারে ‘ঘোষণামূলক মোকদ্দমা’ দায়ের করে ভিন্নভাবে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ আছে।

২। আদালত সকল দলিলাদি পর্যালোচনা করিয়া দলিল বাতিলের রায়/ডিক্রি প্রদান করিলে উক্ত ডিক্রির একটি কপি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পাঠাতে হবে। এর পর সেই কপির আলোকে রেজিস্ট্রি অফিস দলিল বাতিলের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বালাম বইতে লিপিবদ্ধ করে রাখবে।

৩। এছাড়াও জাল দলিল তৈরিকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালতে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৩-৪৭৩ ধারায় মামলা করা যায়। বিচারক চাইলে সেই মামলা সরাসরি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন, তদন্ত বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিতে পারেন। দলিল জাতিয়াতির মামলা খুবই জটিল প্রকৃতির মামলা।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Contact us

Fill out the form below, and we will be in touch shortly.

Contact Information