Power of attorney Bangladesh

+8801929125100

মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে সম্পত্তি বন্টনের নিয়ম

মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে সম্পত্তি বন্টনের নিয়ম

মুসলিম আইনে উত্তারাধিকার সম্পত্তি বন্টনের জন্য সুনির্দিষ্ট এবং সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। মুসলিম উত্তরাধিকার আইন  কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের উপর প্রতিষ্ঠিত। মুসলিম আইনে মোতাবেক সম্পত্তি বিলি বা বন্টনের নিয়মে ফারায়েজ বলে। মুসলিম স্কুল অব ল এর বিভিন্ন শাখায় সম্পত্তি বন্টনের আলাদা নিয়ম প্রচলিত আছে। যেহেতু আমাদের দেশে সুন্নি মুসলমানদের অনুসারী বেশী কাজেই, নিম্নে হানাফী আইন মোতাবেক উত্তরাধিকার উল্লেখ করা হল-

হানাফি আইনমতে মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন এর খরচ পরিচালনা, ঋণ পরিশোধ, উইল বা অছিয়ত করে থাকলে সে ব্যক্তিকে সম্পত্তি প্রদানের পর যে সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকবে, তা জীবিত উত্তরাধিকারদের মধ্যে নিম্নের পদ্ধতি অনুযায়ী বণ্টিত হবে।

ছবি: ইসলাম

হানাফি আইনে প্রাথমিক উত্তরাধিকারী মোট- ৬ জন, যারা কখনো সম্পত্তির ওয়ারিশ প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হয় না।

যথা-

(১) পিতা

(২) মাতা

(৩) স্বামী

(৪) স্ত্রী

(৫) পুত্র

(৬) কন্যা।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

 বর্নিত এই ৬ জন উত্তরাধিকারীর অংশ এবং অন্যন্যদের অংশ  নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে বন্টিত হবে-

পিতা
(মৃত ব্যক্তির সম্পদের উপর তাঁর পিতা ৩ (তিন) প্রকারে সম্পদ পাবেন)
১। মৃত ব্যক্তির পুত্র, পুত্রের পুত্র কিংবা পুত্রের পুত্রের পুত্র এভাবে যত নিচেই হোক না কেন যদি থাকে, তবে মৃত ব্যক্তির পিতা পাবেন সম্পদের ছয় ভাগের এক ভাগ (১/৬)।
 
২। মৃত ব্যক্তির কোন পুত্র, পুত্রের পুত্র কিংবা পুত্রের পুত্রের পুত্র এভাবে যত নিচেই হোক যদি না থাকে, কেবল কন্যা থাকে; তবে মৃত ব্যক্তির পিতা মোট সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ ( ১/৬) পাবেন এবং কন্যাদের ও অন্যান্যদের দেয়ার পর যে সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকবে তাও পাবেন।
 
৩। যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান না থাকে, তবে মৃত ব্যক্তির বাকী অংশীদারদের দেয়ার পর অবশিষ্ট সকল সম্পত্তি পিতা পাবেন।
মাতা
(মৃত ব্যক্তির মাতা ৩ (তিন) ভাবে সম্পদ পাবেন)
১। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নেরই হউক, থাকে অথবা যদি পূর্ণ, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন থাকে; তবে মাতা মোট সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ ( ১/৬) পাবেন।
 
২। যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকে এবং যদি একজনের বেশি ভাই বা বোন না থাকে; তবে মাতা তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) পাবেন।
 
৩। যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকে অথবা কমপক্ষে দুইজন ভাইবোন না থাকে এবং যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী অংশ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে তার তিন ভাগের এক ভাগ ( ১/৩) মাতা পাবেন।
স্বামী
(স্বামী ২ (দুই) ভাবে মৃত স্ত্রীর সম্পত্তি পাবে)
 
১। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান-সন্ততি থাকে তবে স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ।
 
২। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান-সন্ততি না থাকে তবে স্বামী পাবে অর্ধেক সম্পত্তি।
স্ত্রী
(মৃত স্বামীর সম্পত্তি ২ (দুই) ভাবে পাবে)
১। যদি মৃত ব্যক্তির এবং তাঁর স্ত্রীর সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে তবে স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ (১/৮) পাবেন।
 
২।যদি মৃত ব্যক্তি এবং তাঁর স্ত্রীর সংসারে কোন সন্তান না থাকে তাহলে স্ত্রী মোট সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ (১/৪) পাবেন।
পুত্রপুত্র সকল ক্ষেত্রেই মৃত ব্যক্তির সম্পদ পেয়ে থাকে। এছাড়া, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি সকলের অংশ ভাগের পর অবশিষ্ট সকল অংশ পুত্র-কন্যারা পাবে। এক্ষেত্রে পুত্র যে পরিমান সম্পত্তি পাবে, কন্যা তার অর্ধেক পরিমাণ পাবে। তবে যদি কন্যা না থাকে, বাকী সম্পত্তি সম্পূর্ণ অংশ পুত্র পাবে।
কন্যামৃতের কন্যা ৩ (তিন) নিয়মে মৃতের সম্পদ পেয়ে থাকে, যথা-
 
১। যদি মৃত ব্যক্তির একজন কন্যা থাকে, তবে সে সম্পদের দুইভাগের একভাগ (১/২) পাবে।
 
২। যদি মৃত ব্যক্তির একাধিক কন্যা থাকে, তবে সব কন্যা একত্রে তিন ভাগের দুই ভাগ সম্পত্তি পাবে।
 
৩। যদি মৃত ব্যক্তির পুত্র-কন্যা উভয়েই থাকে, তবে পুত্র যে পরিমাণ সম্পত্তি পাবে, কন্যা তাঁর অর্ধেক পাবে।
 
দাদাপিতার পিতা অর্থাৎ পিতামহ বা এর যত উপরে হোক না কেন, নিম্নলিখিত ভাবে মৃতের সম্পত্তি পাবে-
 
১। মৃতের পিতা জীবিত থাকলে দাদা সম্পত্তি পাবে না।
 
২। মৃতের পুত্র বা পুত্রের পুত্র থাকলে দাদা মোট সম্পত্তির (১/৬) ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।
 
৩। মৃতের পুত্র সন্তান না থাকলে বা পুত্রের সন্তান (এভাবে নিচের দিকে) শুধু কন্যা হলে কন্যা সন্তানের সংগে দাদা মোট সম্পত্তির (১/৬) ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে এবং কন্যা বা পুত্রের কন্যাদের অংশ প্রদানের পর যা বাকী থাকবে, দাদা আসাবা হিসেবে তাও পাবে।
 
৪। মৃতের কোন সন্তান বা সন্তানের সন্তান (এভাবে নিচের দিকে) না থাকলে, অন্যান্যদের দেওয়ার পর দাদা আসাবা হিসেবে বাকী সমুদয় সম্পত্তি পাবে।
নানী ও দাদীপ্রকৃত নানী ও দাদী (যত উপরেই হোক)
 
১। নানী বা দাদীগণ মৃতের সম্পত্তির (১/৬) ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।
 
২। মৃতের পিতা বা মাতা জীবিত থাকলে নানী বা দাদীগণ কোন সম্পত্তি পাবে না।
পুত্রের কন্যাপুত্রের কন্যা বা পুত্রের পুত্রের কন্যার অবস্থা (এভাবে যত নিচেই হোক) নিম্নলিখিত ধরনের হবে-
 
১। মৃত ব্যক্তির কন্যা থাকলে, পুত্রের কন্যা কোন সম্পত্তি পাবে না।
 
২। মৃত ব্যক্তির একাধিক কন্যা জীবিত থাকলে, পুত্রের কন্যাগণ কোন সম্পত্তি পাবে না।
 
৩। মৃত ব্যক্তির একটি মাত্র কন্যা থাকলে মৃত পুত্রের কন্যাগণ (১/৬) ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।
 
৪।পুত্রের কন্যা একজন হলে সম্পত্তির দুই ভাগের একভাগ পাবে।
 
৫। পুত্রের কন্যার সংখ্যা একাধিক হলে সকলে মিলে সম্পত্তির তিন ভাগের দুই ভাগ পাবে।
 
৬। মৃত ব্যক্তির পুত্রের পুত্র বা তার পুত্র (যত নিচে হোক) থাকলে, পুত্রের কন্যাগণ পুত্রের সাথে আসাবা হিসেবে সম্পত্তি প্রাপ্ত হবে এবং কন্যা, পুত্রের অর্ধেক সম্পত্তি পাবে।
বৈপিত্রেয় ভাইবৈপিত্রেয় ভাই তিন ভাবে মৃতের সম্পত্তি পাবে, যথা-
 
১। একজন হলে (১/৬) ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।
 
২। দুই বা ততোধিক হলে (১/৩) তিন ভাগের এক ভাগ পাবে।
 
৩। মৃতের সন্তান বা পুত্রের সন্তান (এভাবে যত নিচে হোক), পিতা বা দাদা জীবিত থাকলে বৈপিত্রেয় বা বৈমাত্রেয় ভাই বা বোন কোন সম্পত্তি পাবে না।
 

কোন উত্তরাধিকারী সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে

যদি সে-

(ক) যার সম্পত্তি তাকে হত্যা করে

(খ) ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করে।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

LET US HELP YOU

Consult with our Specialist Lawyer

ADV Matin Sarkaer Mishuk

Phone- 01929125100

E-mail – [email protected]

See Credentials: Linkedin Portfolio AIN BISHAROD– (A Legist Law Firm)

Facebook
Twitter
LinkedIn

সাম্প্রতিক পোস্ট

ভাড়া চুক্তিপত্র

দোকান / বাণিজ্যিক স্পেস ভাড়া চুক্তিপত্র নমুনা

বাড়ি ভাড়া বা দোকান ভাড়া দেয়া-নেয়ার ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে সু-নির্দিষ্ট চুক্তি থাকা আবশ্যক। উক্ত চুক্তি পত্রে উভয়ৈর দ্বায়িত্ব – কর্তব্য এবং আর্থিক লেনদেনর বিষয় উল্লেখ থাকতে হয়। চুক্তি মেয়াদ শুরু, চুক্তি মেয়াদ শেষ এবং উপ-ভাড়াটিয়া নিয়োগ ও সার্ভিস চার্জ প্রদানের মতো সুক্ষ বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে দু-পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে নিতে হয়। ভাড়া চুক্তির মধ্যে এসব বিষয় উল্লেখ না থাকে ভাড়া দাতা এবং ভাড়াটিয়া দুজনের মধ্যে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ঝামেলার সৃষ্টি হয়। একটি আদর্শ ভাড়া চুক্তির নমুনা এখানে দেয়া হল আমাদের পাঠকদের বুঝার সুবিধার্থে।

Read More »
দেনমোহর আদায়

দেনমোহর আদায় করবেন কিভাবে ?

আমাদের সমাজে দেখা যায় বিয়েতে দেনমোহর নগদ পরিশোধের ব্যাপারটি সরাসরি উপেক্ষা করা হয়। হাতে গোনা কয়েকটা বিয়ে ছাড়া নগদ দেনমোহর আদায় এর উদাহরন খুব কম। অনেকে আবার দেনমোহর দেয়া দূরের কথা বিয়েতে দেয়া বিভিন্ন উপহার কে উসূল দেখিয়ে দেনমোহরের সাথে স্বমন্বয় করে নেয়। বিয়ের পর বক্রী দোনমোহরের অর্থ নিজ তাগিদে কোন স্বামী পরিশোধ করেন না ফলে স্ত্রী তাহার দেনমোহরের পাওনা হতে আজীবন বঞ্চিত থাকেন।

Read More »

নামজারী আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া

কামাল দুই বিঘা জমির মালিক এবং সে নিয়মিত সরকারী খাজনা পরিশোধ করে থাকে। সরকারী অফিসে লেখা আছে যে, কাওলা মৌজার আরএস ৫১০ দাগের ২ বিঘা জমির মালিক কামাল। পরবর্তীতে, কামাল উক্ত জমি রহমত এর নিকট বিক্রী করে। যেহেতু বর্তমানে রহমত মালিক কাজেই কামালের নাম কেটে রহমতের নাম সরকারী কাগজপত্রে লিপিবদ্ধ করাই মূলত নামজারী ।

Read More »

Recent