+8801929125100

যেসব কাজ স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বেআইনী

যেসব কাজ স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বেআইনী

“আর কিছু দিন তারপর বেলা মুক্তি! কসবার ঐ নীল দেয়ালের ঘর।

সাদাকালো এই জঞ্জালে ভরা মিথ্যে কথার শহরে, তোমার আমার লাল-নীল সংসার! ।”

প্রতিটা সংসারেরই শুরু হয় দুই বুক লাল-নীল স্বপ্নের রঙে। তবে খুব কম সংসারেই এই স্বপ্নগুলোর বাস্তবায়ন দেখা যায়। সংসার হচ্ছে পৃথীবির সবচেয়ে জটিল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ এর ধারনাটা এই জায়গায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

সংসারের সব খুঁটিনাটি স্বামী-স্ত্রী দুজনের পারস্পরিক সিদ্ধান্তে হওয়া আবশ্যক। আমাদের জাতিগত চেতনায় একটা বিষয় এখনো আছে যে, পুরুষ পরিবারের কর্তা তার সিদ্ধান্তেই সব হবে। এজন্যই বাঙ্গালী পরিবারকে পুরুষতান্ত্রিক পরিবার বলে। যদিও আমাদের সমাজের নারীরাও ব্যাপারটা খুব ন্যাচারাল বলেই মনেপ্রাণে ধারন এবং অনুশীলন করে আসছে।

কিন্তুু সংসারের সিদ্ধান্তে নারীরও রয়েছে মতামত দানের অধিকার যাহা অস্বীকার করলে সংসারে কোনদিন শান্তি আসেনা।

বিবাহের পরপরই নারীর কিছু আইনগত অধিকার জন্মায় যা স্বামী কর্তৃক অস্বীকার বা অবাধ্য হওয়া আইনত অপরাধ। যেমন,

১। স্ত্রীর দেনমোহরের অধিকার।

২। ভরণপোষন পাওয়ার অধিকার।

৩। সন্তান কাছে রাখার অধিকার। ( বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড়া)

৪। স্ত্রী নামে সম্পত্তি থাকলে স্ত্রীর অমতে বিক্রয় করা গুরুতর অপরাধ।

৫। আমমোক্তার বলে প্রাপ্ত বিশেষ ক্ষমতার অপপ্রয়োগ।

৬। স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া সম্পূর্ণ সম্পত্তি উইল করা।

৭। স্ত্রীর উত্তরাধিকারের হক নষ্ট করা বা বঞ্চিত করা।

৮। স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব বা অর্থনৈতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অসীম আধিকার খাটানো ।

৯। স্ত্রীর প্রাপ্ত গিফট বা হেবার ব্যাবস্থাপনার একচ্ছত্র অধিকার চর্চা।

১০। স্ত্রীর অমতে বিয়ে।

উপরিউক্ত কাজ গুলোর মধ্যে যতটা আইনি বিষয় আছে তার চেয়ে বেশী নৈতিকতার বিষয় জড়িত।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

তবে সবচেয়ে তর্কিত ও চর্চিত ব্যাপারটা হচ্ছে স্ত্রীর অমতে বিয়ে। যদি কারও ২য় বিয়ের সাধ জাগে তাহলে অবশ্যই ১ম বউয়ের অনুমতি লাগবে তা পূরণে । ২য় বিয়ের ব্যাপারটা কারো কাছে বিলাসিতা, কারো কাছে নর মাংসে তীব্র রুচি আর কারো কাছে প্রয়োজনীয়তার প্রাকৃতিক উপযোগ।

আর এই উপযোগের ব্যাপারটা আইন বিশারদগণ ভালো ভাবে বিবেচনা করে বললেন যে, যদি কোন স্বামী বন্ধ্যা নারী, গুরুতর সংক্রামক রোগাক্রান্ত বা যৌন অপারগতার কারণে ২য় বার বিয়ে করতে চান তাহলে তার এই উপযোগ আইনসিদ্ধ।

২য় বার বিয়ে করতে আগ্রহী স্বামীকে তাহার ঠিকানায় সরকার নির্ধারিত সালিশী পরিষদের নিকট আবেদন করে বিয়ের অনুমতি চাইতে হবে। বউ যদি আপত্তি দেয় এবং স্বামী যদি বউয়ের উপরোক্ত সমস্যা প্রমাণে ব্যার্থ হন তাহলে তাহার লাল-নীল স্বপ্ন আইনত বাস্তবায়নযোগ্য হবেনা।

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৬(৫) ধারা মতে যাহার শাস্তি ১ বছর জেল, ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড।

মজার ব্যাপার হল, আপনি যদি ১ম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েও ২য় স্ত্রীর নিকট ১ম বিয়ে গোপন করে ২য় বিয়ে করেন তাহলে আপনার জন্য রয়েছে বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৯৫ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম সাজা এবং অর্থ দন্ডের এক দূর্বিসহ বান্ডেল অফার।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়
Facebook
Twitter
LinkedIn

সাম্প্রতিক পোস্ট

নামজারী আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া

কামাল দুই বিঘা জমির মালিক এবং সে নিয়মিত সরকারী খাজনা পরিশোধ করে থাকে। সরকারী অফিসে লেখা আছে যে, কাওলা মৌজার আরএস ৫১০ দাগের ২ বিঘা জমির মালিক কামাল। পরবর্তীতে, কামাল উক্ত জমি রহমত এর নিকট বিক্রী করে। যেহেতু বর্তমানে রহমত মালিক কাজেই কামালের নাম কেটে রহমতের নাম সরকারী কাগজপত্রে লিপিবদ্ধ করাই মূলত নামজারী ।

Read More »
তালাক দেওয়ার নিয়ম

বিদেশ থেকে তালাক দেওয়ার পদ্ধতি

বিদেশ থেকে আম-মোক্তার নামা দলিলের মাধ্যমে প্রতিনিধি নিযুক্ত করে তালাক প্রদানের যথাযর্থতা সম্পর্কে আইনে সুনির্দিষ্ট কোন বক্তব্য নেই। প্রচলিত প্রাকটিস এবং আইনজীবীদের পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই আম-মোক্তারনামা মূলে তালাকের একটা প্রচলন আছে। তবে এ ধরনের তালাক বহুল বিতর্কীত কারন তালাক সংশ্লিস্ট আইনের কিছু বিধান প্রকৃত অর্থে চর্চা করার সুযোগ থাকেনা।

Read More »

আমমোক্তারনামা দলিল বাতিলের নিয়ম

পাওয়ার অব এটর্নি বা আমমোক্তারনামা দলিল এমন একটি লিগ্যাল ডকেুমেন্ট যার মাধ্যমে একজন ব্যাক্তি তাহার পক্ষে কোন নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার জন্য তাহার মনোনীত ও বিশ্বস্ত ব্যাক্তিকে ক্ষমতা অর্পণ করে।  আমাদের দেশে পাওয়ার অব এটর্নীর কথা শুনলে অনেকেই জমি-জমার ক্ষমতা অর্পণকে বুঝায়। প্রকৃতপক্ষে পাওয়ার অব এটর্নি বা আমমোক্তারনামা দলিলের মাধ্যমে জমি-জমা ছাড়া আরো অনেক কাজ করা যায়।

Read More »

Recent