Power of attorney Bangladesh

+8801929125100

অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের বিয়ের আইনি পদ্ধতি

অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের বিয়ের আইনি পদ্ধতি

অনেক সময় দেখা যায় যে, দুই পক্ষের পরিবার বিয়েতে সম্মত থাকার পরও আইনে মোতাবেক বয়স না হওয়ায় বিয়ে সম্পন্ন করা যায় না। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলেই বিয়ে নিষিদ্ধ ব্যাপারটা আসলে এমন নয়। ২০১৭ সালে আমাদের দেশে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন তৈরি হয়। উক্ত আইনের ১৯ ধারায় অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ের বিশেষ নিয়ম যুক্ত করা হয়।

নতুন আইনে বিয়ের যোগ্যতা হিসেবে ছেলের বয়স ২১ এবং মেয়ের ১৮ বছর নির্ধারণ করা হয়। আইনটি প্রণয়নের শুরুতে NGO সহ অনেকে বলছিলেন, বিশেষ বিধানের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বাল্যবিবাহ বৈধতা পেয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে অবশ্য সরকারের পক্ষ হতে বলা হয়, একদম বিশেষ কোন পরিস্থিতি, যেমন অপ্রাপ্ত বয়স্কের আত্মহত্যার সম্ভবনা বা অপ্রত্যাশিত ভাবে গর্ভসঞ্চার হলে মিসক্যারেজ , সামাজিক নানান অবক্ষয় বা  ভ্রুণ হত্যার মত পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

একটা বিশেষ পরিস্থিতির বর্ণনা দেই। ধরুন- নবম শ্রেণীর দুইজন ছেলেমেয়ে প্রেমে পড়লো, এবং তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়ালো এবং মেয়েটি গর্ভবতী হলো। এই যে অনাগত সন্তান, তার কোন বৈধতা নেই!

এমন পরিস্থিতিতে যদি বিয়ে দেয়া না হয় বা বিয়ে অস্বীকার করা হয়, তাহলে মেয়েটির ভবিষ্যৎ কি হবে?

সামাজিক ও বাস্তবিক এসব সমস্যা বিবেচনা নিয়ে চিন্তা করলে অবশ্য ভাল হয়, এই যে ভিকটিম শিশু ছেলে বা মেয়েকে নিজের পরিবারের সদস্য ভাবুন।

সবদিক বিবেচনায় বিয়েই ‘মন্দের ভাল’ মত একটি সমাধান। সমাজ ব্যস্তবতায় আইন প্রণেতাগণের বোধ ও প্রজ্ঞার জন্যই ‘বিশেষ বিধান’ সংযোজন করা হয়েছে।

বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এই আইনের ১৯ ধারার বিশেষ বিধান টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, বিশেষ বিধানের আওতায় বিয়ের অনুমতি দিতে অনেকগুলো শর্ত আরোপ করা হয়েছেঃ

১. আদালতের নির্দেশ (Court’s order) থাকতে হবে।

২. বাবা মা অথবা অভিভাবকের সম্মতি (Consent of parents or guardians) থাকতে হবে।

৩. নাবালক বা কম বয়স্কার সর্বোত্তম স্বার্থে (highest interest of the minor) ।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা এর ১৭ বিধি অনুযায়ী বিশেষ বিধান প্রয়োগে দুইপক্ষকে যৌথভাবে আদালতে আবেদন করতে হবে।

আবেদন করতে যারা পারবেন

ক. উভয়পক্ষের পিতামাতা,

খ. আইনগত অভিভাবক,

গ. অপ্রাপ্ত বয়স্ক পাত্রপাত্রী সহ উভয়পক্ষ।

এমন আবেদন পাওয়ার পরে বিজ্ঞ আদালত আবেদনের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য যাচাই কমিটির কাছে প্রেরণ করবেন। UNO এর সভাপতিত্বে ৭ সদস্যের যাচাই কমিটি উক্ত বিয়ের বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। তবে আবেদন যাচাইয়ে কমিটিকে ২ টি মানদন্ড বিবেচনায় নিতে হবে।

১. বিয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে হবে।

২. যখন বিয়েটা হবে সর্বশেষ বিকল্প।

কমিটি নিন্ম বর্ণিত ক্ষেত্রে বিয়ে না হওয়ার  সুপারিশ করতে পারবে।

 (ক) বিবাহটি যদি জোরপূর্বক হয়।

(খ)অপহরণ, ধর্ষণ বা জোরপূর্বক মিলনের কারনে হলে,

৩. এ সংক্রান্তে মামলা বিচারাধীন থাকলে।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

আদালত যদি কমিটির সুপারিশ পেয়ে সন্তুষ্ট হয় তাহলে বিয়ের অনুমতি দিবেন, বা নামঞ্জুর করবেন অথবা পুনরায় তদন্ত করাবেন, এমনকি কমিটিকে আদালতে উপস্থিত করিয়ে তাদের বক্তব্য শুনবেন।

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে , এই বিশেষ বিধানের আওতায় বিয়ের অনুমতি পাওয়া সহজ নয়। আদালত অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিত করবে। দুইপক্ষের যৌথ আবেদন হতে হবে, আদালত সাথে সাথে অনুমতি দিবে না, একটা কমিটি সত্যতা যাচাই করে সুপারিশ করবে, তারপর আদালত আইন ও বিধির শর্ত পূরণ হলেই এই বিশেষ বিধান প্রয়োগ করে অপ্রাপ্তবয়স্কের বিয়ের অনুমতি দিবেন।

একটা বিষয় পরিষ্কার হওয়া উচিত। এই ২০১৭ সালের আইন এবং পরের ২০১৮ সালের বিধিতে কোথাও কোন আদালত এমন অনুমতি দিবে তা বলা হয়নি। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ও বিধি একত্রে পড়লে বিষয়টি পরিষ্কার হয় যে, এ বিষয়ে যথাপোযুক্ত ফোরাম হলো জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি। কেননা বিধিতে কয়েকটি ফোরাম সংযুক্ত আছে যেখানে ‘বিচারিক আদালত’ ও মোবাইল কোর্ট পৃথক ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ফৌজদারি কার্যবিধির ২৯ ধারা ও ২য় তফসীলের ৮ম কলাম মতে, offense under other laws নীতিতে ২ বছর পর্যন্ত শাস্তিযোগ্য হওয়ায় এ আইনের অধীন অপরাধের বিচার ও তদন্ত জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট করবেন। এ আইনের অপরাধগুলো আমলযোগ্য, জামিন অযোগ্য এবং আপোষযোগ্য।

 আইনের ৪, ৫ ধারা ও ১৫ বিধি মতে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। অভিযোগ দায়েরের সময়সীমা ঘটনা হতে ২ বছর।

মজার বিষয় হলো, আদালত (জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রসি) বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রয়োজনে বিয়ের উপর নিষেধাজ্ঞাও দিতে পারবেন।

মামলার নিষ্পত্তি হবে ২ ভাবে-

১. বিচারে খালাস বা শাস্তি

২. মুচলেকা সম্পাদন।

মুচলেকার ক্ষেত্রে শর্ত হলো, বিয়েটি সম্পাদন হয়নি এবং বলতে হবে, ভবিষ্যতে বাল্যবিবাহ নিরোধে তৎপর থাকবে। অত্র আইনের কোন অপরাধ সংগঠিত হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির পাশাপাশি মোবাইল কোর্টও তাৎক্ষণিকভাবে ও স্বীকারোক্তি ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর ৬ ও ৭ ধারার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করে শাস্তি দিতে পারবে, তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারী বা পুরুষের ক্ষেত্রে পারবে না, সেক্ষেত্রে বিচার ও শাস্তি হবে শিশু আদালতে।

আগে বিয়ের ক্ষেত্রে এভিডেভিড করে বয়স বেশি দেখিয়ে কিছু ক্ষেত্রে অপ্রাপ্ত বয়স্ককে বিয়ে দেওয়া হতো। এখন বয়স প্রমাণে এমন এভিডেভিড এর সুযোগ নেই।

বৈধ কাগজপত্র হিসেবে

ক. জন্ম নিবন্ধন সনদ,

খ. জাতীয় পরিচয় পত্র,

গ. এসএসসি সার্টিফিকেট,

ঘ. জেএসসি সার্টিফিকেট,

ঙ. পিইসি সার্টিফিকেট এবং

চ. পাসপোর্ট বিবেচনায় নেওয়া যাবে।

বয়স প্রমাণে এই কাগজপত্রগুলো সুনির্দিষ্ট করায় এখন প্রতারণার সুযোগ কমে এসেছে।

আরো পড়ুন:

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
জমির ১৫ প্রকার দলিল সহজে চেনার উপায়
জমি বেদখল হলে কী করবেন
মামলা থাকলে কি চাকরী হয়?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত ২০ টি কমন প্রশ্ন-উত্তর 
মুসলিম আইনে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
দলিল বাতিল হবার বিভিন্ন কারন 
জমির খতিয়ান যাচাই করুন অনলাইনে
ডিভোর্স ‍দিলে কি দেনমোহর দিতে হয়

Facebook
Twitter
LinkedIn

সাম্প্রতিক পোস্ট

ভাড়া চুক্তিপত্র

দোকান / বাণিজ্যিক স্পেস ভাড়া চুক্তিপত্র নমুনা

বাড়ি ভাড়া বা দোকান ভাড়া দেয়া-নেয়ার ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে সু-নির্দিষ্ট চুক্তি থাকা আবশ্যক। উক্ত চুক্তি পত্রে উভয়ৈর দ্বায়িত্ব – কর্তব্য এবং আর্থিক লেনদেনর বিষয় উল্লেখ থাকতে হয়। চুক্তি মেয়াদ শুরু, চুক্তি মেয়াদ শেষ এবং উপ-ভাড়াটিয়া নিয়োগ ও সার্ভিস চার্জ প্রদানের মতো সুক্ষ বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে দু-পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে নিতে হয়। ভাড়া চুক্তির মধ্যে এসব বিষয় উল্লেখ না থাকে ভাড়া দাতা এবং ভাড়াটিয়া দুজনের মধ্যে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ঝামেলার সৃষ্টি হয়। একটি আদর্শ ভাড়া চুক্তির নমুনা এখানে দেয়া হল আমাদের পাঠকদের বুঝার সুবিধার্থে।

Read More »
দেনমোহর আদায়

দেনমোহর আদায় করবেন কিভাবে ?

আমাদের সমাজে দেখা যায় বিয়েতে দেনমোহর নগদ পরিশোধের ব্যাপারটি সরাসরি উপেক্ষা করা হয়। হাতে গোনা কয়েকটা বিয়ে ছাড়া নগদ দেনমোহর আদায় এর উদাহরন খুব কম। অনেকে আবার দেনমোহর দেয়া দূরের কথা বিয়েতে দেয়া বিভিন্ন উপহার কে উসূল দেখিয়ে দেনমোহরের সাথে স্বমন্বয় করে নেয়। বিয়ের পর বক্রী দোনমোহরের অর্থ নিজ তাগিদে কোন স্বামী পরিশোধ করেন না ফলে স্ত্রী তাহার দেনমোহরের পাওনা হতে আজীবন বঞ্চিত থাকেন।

Read More »

নামজারী আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া

কামাল দুই বিঘা জমির মালিক এবং সে নিয়মিত সরকারী খাজনা পরিশোধ করে থাকে। সরকারী অফিসে লেখা আছে যে, কাওলা মৌজার আরএস ৫১০ দাগের ২ বিঘা জমির মালিক কামাল। পরবর্তীতে, কামাল উক্ত জমি রহমত এর নিকট বিক্রী করে। যেহেতু বর্তমানে রহমত মালিক কাজেই কামালের নাম কেটে রহমতের নাম সরকারী কাগজপত্রে লিপিবদ্ধ করাই মূলত নামজারী ।

Read More »

Recent